ছবি সংগৃহীত
ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে আহত হয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক ক্যামেরাম্যান কোমায় চলে গেছেন। গুরুতর আহত ওই সংবাদকর্মীর নাম ফাদি আল-ওয়াহিদি।
চলতি মাসে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি স্নাইপারের গুলিতে আহত হন তিনি। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি স্নাইপারের গুলিতে আহত আল জাজিরার ক্যামেরাম্যান ফাদি আল-ওয়াহিদি কোমায় চলে গেছেন এবং জরুরি চিকিৎসার জন্য ইসরায়েল তাকে এখনও অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটি ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি।
আল জাজিরা বলছে, উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি স্থল আক্রমণের বিষয়ে রিপোর্ট করার সময় ফিলিস্তিনি এই সাংবাদিককে ঘাড়ে গুলি করা হয়। যদিও দায়িত্বপালনের সময় তিনি প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরেছিলেন যেটি স্পষ্টভাবে তাকে প্রেসের সদস্য হিসাবে চিহ্নিত করেছিল।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা তিনটি সংস্থার আবেদন সত্ত্বেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আল-ওয়াহিদি এবং সহযোগী আল জাজিরার ক্যামেরাম্যান আলী আল-আত্তারকে “জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসার” জন্য গাজা ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি।
বৃহস্পতিবার আল জাজিরা আরবি জানিয়েছে, গত ৯ অক্টোবর তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর থেকে আল-ওয়াহিদির অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।
গাজা শহরের পাবলিক এইড হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছেন, তারা তাকে চিকিৎসা করতে এবং সম্পূর্ণ পক্ষাঘাত প্রতিরোধ করতে অক্ষম। তিনি তার ধমনী, শিরা এবং ছিন্নভিন্ন হাড়ের ক্ষতিতে ভুগছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
হাসপাতাল বারবার আল-ওয়াহিদিকে বিদেশে স্থানান্তর করার জন্য অনুরোধ করছে, কারণ তার আঘাতের যথাযথ চিকিৎসার জন্য হাসপাতালটিতে সম্পদ খুবই অপর্যাপ্ত।
মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের অবস্থা কভার করার সময় আল-আত্তারকে গুলি করার কয়েকদিন পর আল-ওয়াহিদির ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার এই ঘটনা ঘটে।
মেডিকেলে টেস্টের একটি স্ক্যানে দেখা গেছে, তার মাথার খুলিতে শ্রাপনেল আটকে আছে এবং মস্তিষ্কে রক্তপাত হচ্ছে, কিন্তু এই আঘাতের জন্য গাজায় কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
নিহত হয়েছেন ৪২ হাজারেরও বেশি মানুষ। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া ইসরায়েলের এই চলমান আগ্রাসনে গাজায় প্রায়শই সাংবাদিকদেরকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইসরায়েলের যুদ্ধে ভূখণ্ডটিতে এখন পর্যন্ত ১৭৫ জনেরও বেশি গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন।